কেষ্ট-কন্যার নামে আরও বিপুল সম্পতির হদিস
![]() |
বোলপুর: তদন্তে নেমে ১৭ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত, চালকল এবং জমি সংক্রান্ত সম্পত্তির খোঁজ আগেই মিলেছে। এ বারে anubrata মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে বোলপুরের নানা এলাকায় আরও দশটিরও বেশি জমির সন্ধান মিলল।
জেলা তৃণমূল সভাপতি anubrata mandal স্ত্রী ছবি ও মেয়ে সুকন্যার নামে একাধিক জমির খোঁজ মিলেছিল আগেই। সেগুলি ছিল বোলপুরের বল্লভপুর, মকরমপুর ও গয়েশপুর এলাকায়। ওই জমিগুলি ছাড়াও এ বার খোসকদমপুর ও কালিকাপুর মৌজা মিলিয়ে আরও ১০টিরও বেশি জমির সন্ধান মিলেছে। সূত্রের খবর, সরকারি তথ্য অনুযায়ী, কালিকাপুর মৌজায় আটটি, খোসকদমপুর মৌজায় দু'টি ও কালিকাপুরের 'ভোলে বোম' চালকলের সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছু জমি রয়েছে সুকন্যার নামে। এই সন্ধান যে মিলতে পারে, তা গরু পাচার মামলায় anubrata গ্রেফতারির পরেই সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছিল। সিবিআইয়ের দাবি, ২০১১ সালে সুকন্যার নামে একটি সংস্থা খোলা হয়। সেখানে বিভিন্ন সময়ে anubrata ও তাঁর স্ত্রী ডিরেক্টর হিসেবে থেকেছেন। ওই সংস্থার মাধ্যমে ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বিপুল পরিমাণে সম্পত্তিকেনা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল
সিবিআই সূত্রে,
খোসকদমপুর ও কালিকাপুর মৌজার জমিগুলিও ওই সময়েই কেনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সরকারি নথি অনুযায়ী, কালিকাপুর মৌজায় আটটি জমি কেনা হয়েছে ২০১৪ সালে। ওই বছরই কেনা হয়েছে 'ভোলে বোম' চালকলের সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছু জমি। দু'বছর পরে, ২০১৬
সালে খোসকদমপুর মৌজায় দু'টি জমি কেনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। চালকল বাদ দিয়ে বাকি জমির পরিমাণ প্রায় সাত বিঘা। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের
দাবি, সুকন্যার নামে একাধিক সংস্থার হদিস মিলেছে। সেগুলিতে বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থার নামে টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে বলেও দাবি। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন ওই সংস্থার মাধ্যমে করা হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। রয়েছে একাধিক জমিও। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকার এত সম্পত্তি কী ভাবে হল, তার শিকড়ে পৌঁছতে চাইছে সিবিআই। সেই সূত্রেই তারা খতিয়ে দেখছে, এই সম্পত্তির নেপথ্যে গরু পাচারের টাকার ভূমিকা আছে কি না।
Anubrata-sukanya নামে এই সম্পত্তির খোঁজ মেলায় কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “বোঝাই যাচ্ছিল, কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে। তাই আস্তে আস্তে এখন সব বার হচ্ছে। সমস্ত সত্য উদ্ঘাটন হোক সবার সামনে।” বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অষ্টম মণ্ডল বলেন, "আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি ওঁর (anubrata) নামে-বেনামে বহু সম্পত্তি রয়েছে। ধীরে ধীরে মানুষের কাছে সব স্পষ্ট হচ্ছে। আমরা চাই
এছাড়াও anubrata মণ্ডলের এক ঘনিষ্ঠের বাড়িতে সিবিআইয়ের হানা দখল সকল নথি।
anubrata ঘনিষ্ঠ সেই বিদ্যুতের বাড়িতে সিবিআই
এবার সিবিআইয়ের হানা anubrata মণ্ডলের 'ছায়াসঙ্গী' বিদ্যুৎত্বরণ গায়েনের বাড়িতে। রবিবার সকালে আচমকা বোলপুর পুরসভার কর্মী বিদ্যুৎত্বরণের বাড়িতে হাজির হন সিবিআইয়ের দুই আধিকারিক। বেলা দেড়টা নাগাদ সিবিআইয়ের দুই আধিকারিক বিদ্যুৎত্বরণ গায়েনের বাড়িতে যান। চিকিৎসা করাতে তিনি এখন কলকাতায়। এই তথ্য জানার পর তাঁরা তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা কথা বলে। ফিরে যাওয়ার সময় বাড়ি থেকে বেশ কিছু কাগজপত্রও সিবিআই আধিকারিকরা নিয়ে যান। সিবিআই। সূত্রে খবর, anubrata মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল যে দু'টি কোম্পানির ডিরেক্টর, সেই দুই সংস্থায় অপর ডিরেক্টর হিসাবে নাম রয়েছে বোলপুর পুরসভার কর্মী বিদ্যুৎত্বরণেরও। পাশাপাশি তাঁর নামে বেশকিছু সম্পত্তি ও একাধিক বাড়ির খোঁজ মিলেছে। সেই বিষয়েই তথ্য জানতে এদিন সিবিআইয়ের এই আচমকা অভিযান anubrata বিদ্যুবরণের বাড়িতে। anubrata মণ্ডলকে গ্রেফতার করার পর একাধিক বিষয় সামনে উঠে আসছে। anubrata ঘনিষ্ঠদের উপরও নজর রেখেছে সিবিআই। খোঁজ মিলছে জেলা জুড়ে একাধিক জমি, রাইস মিল-সহ সম্পত্তির। এর মধ্যে দু'টি কোম্পানির ডিরেক্টর বোলপুর পুরসভার কর্মী বিদ্যুৎ গায়েন। তাঁর নামে আরও সম্পত্তি রয়েছে বলে সন্দেহ সিবিআইয়ের। anubrata মণ্ডলের নিচুপট্টির বাড়ির সামান্য দূরেই বিদ্যুৎত্বরণের দোতলা বাড়ি। anubrata ঘনিষ্ঠ সেই বিদ্যুতের বাড়িতে
একই পাড়ার বাসিন্দা হওয়ায় দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক বহুদিনের। বস্তুত, রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগে এবং অনুব্রত মণ্ডল আজকের ‘anubrata মণ্ডল' হয়ে ওঠার আগে থেকেই বিদ্যুৎ তাঁর ঘনিষ্ঠ। ঘনিষ্ঠতার বৃত্তে যে গুটিকয় অনুগামীকে অনুব্রত চোখ বুজে বিশ্বাস করতেন, বিদ্যুৎ তাদের অন্যতম। অনুব্রতকে 'দাদা' বলে ডাকেন তিনি। অনুব্রতও তাঁকে নিজের ভাইয়ের মতো ভালবাসেন। সুকন্যাও বিদ্যুৎকে ডাকেন 'কাকা' বলে। স্বাভাবিকভাবেই অনুব্রত কাণ্ডে সিবিআইয়ের স্ক্যানারে বিদ্যুৎত্বরণ গায়েনের থাকাটা স্বাভাবিক বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। জানা গিয়েছে, দীর্ঘ এক বছর ধরে গুরুতর অসুস্থ বিদ্যুৎত্বরণ। সিবিআইয়ের নজরে রয়েছেন বোলপুর, আহমেদপুরের একাধিক রাইসমিলের মালিকও। তাঁদের একাধিক সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে সিবিআই। এবার তাঁদেরও জেরা করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে পুরনো অবস্থান থেকে সামান্য সরে রবিবার 'তৃণমূলের সবাই চোর নয়' বলে মন্তব্য করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি। এদিন বহরমপুরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে বসে অধীর চৌধুরী বলেন, “তৃণমূল করেন মানেই সবাই চোর নয়। আমি একথা কখনও বলিনি যে, তৃণমূল দলের সবাই চোর। কিন্তু আজ যাঁরা ক্ষমতা ভোগ করছেন, তাঁরা অবশ্যই চোর। চুরি ছাড়া তৃণমূলে কেউ ক্ষমতা ভোগ করছে, আমি তা বিশ্বাস করি না।" অন্যদিকে অধীরের উল্টো সুরে তৃণমূল কংগ্রেসকে 'আগাপাশতলা দুর্নীতিগ্রস্ত দল' বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। এদিন বাঁকুড়ায় বঙ্গীয় সাক্ষরতা প্রসার সমিতির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শাসকদলের বেআইনি কর্মকাণ্ডোর কিছু ধরা পড়েছে মাত্র। সব ধরা পড়বে না।”

